পাখির কলরব, নদীর প্রবাহমানতা, সোনালী সূর্যের উদয়ক্ষণ, আকাশের নীলিমা বিবর্ণতায় মলিন করে দেয়া একদিন; সবুজ ঘাস, সিড়িঘর রক্তাক্ত করা প্রাণস্পন্দন থামিয়ে দেয়া একদিন ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সাল।
প্রকৃতির ক্রন্দনে, মেঘের বিশৃঙ্খল আনাগোনায় ভয়ার্ত শোকে মুহ্যমান রক্তাক্ত বাংলা, যার জমিনে শুয়ে প্রাণ দিয়েছেন এক মহামানব সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী, বাংলাদেশের স্বাধীনতার রূপকার, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
বাংলার ইতিহাসের সবচেয়ে নিকষ কালো অন্ধকার এ রাত্রিতে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর প্রাণপ্রিয় পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যদের বুকের তাজা রক্তে রঞ্জিত হয়েছে এ বাংলা, যে বাংলা ছিলো বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাস্তব প্রাপ্তি। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের জেল জুলুম অত্যাচার ছাপিয়ে তাঁর মানসপটে সুপ্ত একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হলেও সোনার বাংলা গড়ার তাঁর অদম্য ইচ্ছাকে সেই নিকষ কালো রাত্রিতে গুড়িয়ে দিয়েছিলো কিছু বিপথগামী সৈনিক তাদের জিঘাংসার উন্মত্ততার রক্তাক্ত বহি:প্রকাশ ঘটিয়ে দিয়ে।
ক্ষণজন্মা এ মহামানবের অঙ্গুলী নির্দেশনায় গোটা বাঙ্গালী জাতি ১৯৭১ সালে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা সংগ্রামে। তিরিশ লক্ষ শহীদের রক্তস্নাত আত্মত্যাগে বাংলাদেশ নামের ভূখণ্ডের অভ্যুদয় ঘটে পৃথিবীর মানচিত্রে, বাঙ্গালী জাতি পায় লাল সবুজের পতাকার অনন্য আচ্ছাদনে আঁকা একটি সোনালী স্বপ্নের স্বাধীন বাংলাদেশ।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাঙ্গালী জাতিকে ভালবেসে তাঁর পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যদের নিয়ে এ নশ্বর পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন বঙ্গবন্ধু, রেখে গেছেন তাঁর সোনার বাংলা বাস্তবায়নের স্বপ্নের দিকনির্দেশনা।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির অবিসংবাদিত নেতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে তাঁর রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পর্যটন সংস্থা বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন রাষ্ট্রীয় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাঁদের নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এ সংস্থার কর্মকর্তা ও কর্মচারী পিতৃহারা বেদনায় বঙ্গবন্ধুর রক্তে রঞ্জিত ১৫ আগস্ট’কে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে গভীর শ্রদ্ধায় পালন করে।
১৫ আগস্ট ২০১৭ বঙ্গবন্ধুর ৪২ তম শাহাদত বার্ষিকীতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে প্রয়াত পরিবারের বিদেহী আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপনসহ গোটা পর্যটন পরিবার কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা জানাচ্ছে যে, মহান সৃষ্টিকর্তা যেন সর্বকালের শ্রেষ্ঠ এ বাঙ্গালীসহ তাঁর প্রয়াত পরিবারের সকলকে পরম শান্তিতে রাখেন সযত্ন আরশতলে।