Wellcome to National Portal
বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫

বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদযাপিত হলো বিশ্ব পর্যটন দিবস ২০১৫


প্রকাশন তারিখ : 2015-09-27

আজ বিশ্ব পর্যটন দিবস। জাতিসংঘের পর্যটন সংস্থা (UNWTO) -এর উদ্যোগে সমগ্র বিশ্বে ‘বিশ্ব পর্যটন দিবস ২০১৫' উদযাপিত হতে যাচ্ছে। দিবসটির এবারের  মূল প্রতিপাদ্য '1 Billion Tourist, 1 Billion Opportunities' অর্থাৎ 'শত কোটি পর্যটক, শত কোটি সম্ভাবনা'।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পর্যটন শিল্পের গুরুত্ব  ও এর সামাজিক , রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক তাৎপর্য সম্পর্কে অবগতি ও সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্য নিয়ে দিবসটি প্রতিবছর ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী পালিত হয়। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন উদ্ভূত বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ সমূহ  মোকাবেলা ও সে লক্ষ্য অর্জনে পর্যটন শিল্পে পালনযোগ্য ভূমিকাকে তুলে ধরাও দিবসটি উদযাপনের আরেকটি অন্যতম উদ্দেশ্য।

বিশ্ব পর্যটন দিবস-২০১৫ এর এবারের স্বাগতিক রাষ্ট্র হচ্ছে আফ্রিকা মহাদেশের বুরকিনা ফাসো।

২০১৫ সালে সমগ্র বিশ্বের বিভিন্ন পর্যটন গন্তব্যে ১ বিলিয়নেরও বেশি অর্থাৎ শত কোটির বেশী পর্যটকের আগমন ঘটবে। এই বিপুল পরিমাণ পর্যটকের আগমনকে সামনে রেখে পর্যটন গন্তব্য দেশগুলোতে সৃষ্টি হবে শতকোটি সম্ভাবনা। পর্যটন শিল্পের বৃহত্তর পরিসরে অন্তর্ভূক্ত বহুমাত্রিক সেবাদি যেমন-পরিবহন, আবাসন, আপ্যায়ন, বিনোদন ও ট্যুর অপারেশনের আগত পর্যটকগণ সৃষ্টি করবে অপার সম্ভবনা। উল্লেখ্য যে, ৪৮টি স্বল্পন্নোত ও উন্নয়নশীল দেশসমূহে গত ২০০০ সালের পর্যটক আগমন ৬ মিলিয়ন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৪ সালে প্রায় ১,১৩৮ মিলিয়নে দাঁড়িয়েছে যা বিগত বছরের তুলনায় ৪.৭% বেশি। একই সময়ে পর্যটন খাতে আয় ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ১.৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। যারফলে বর্তমানে  স্বল্পন্নোত  দেশসমূহের রপ্তানী আয়ের প্রায় অর্ধেক পর্যটন শিল্প থেকে সংগৃহীত হচ্ছে। অন্যদিকে পর্যটন শিল্পে বিনিয়োগ বৃদ্ধি , বিনিয়োগোত্তর মুনাফার নিশ্চয়তা গন্তব্য দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব বয়ে নিয়ে  আসে এবং পর্যটন শিল্প অতিমাত্রায় শ্রমঘন হওয়ায় প্রথম কর্মসংস্থান হিসেবে নারী ও তরুণদের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করে বলে স্বচ্ছ আয়, সামাজিক নিরাপত্তা বিধান, লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন, দারিদ্র বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

বর্ণিত প্রেক্ষাপটকে ভিত্তি করে সমগ্র বিশ্বের সাথে বাংলাদেশে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড ২৭ সেপ্টেম্বর  বিশ্ব পর্যটন দিবস ২০১৫ উদযাপন করছে। এ উপলক্ষে জাতীয় দৈনিকে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ও সচিব, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন-এর চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী পৃথক পৃথক বাণী প্রদান করেছেন।

পর্যটন দিবসের বাণীতে বিশ্বের পর্যটন শিল্পের গুরুত্ব অনুধাবনের পাশাপাশি পর্যটন শিল্প আর্থ সামাজিক উন্নয়নের জন্য সম্ভবনার অপার দিগন্ত সম্বন্ধে ধারণা প্রদান করা হয়। বিশ্বে বর্তমানে এক বিলিয়নেরও বেশী পর্যটক ভ্রমণের ফলে ভ্রমণকৃত স্থানসমূহে সৃষ্টি হয়েছে কর্ম সম্ভাবনা। এ সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগানো গেলে অর্জন হতে পারে অর্থনৈতিক সাফল্য, দূর হতে পারে বেকারত্ব সমস্যা। এছাড়া এবিষয়ে পর্যটন শিল্পের উদ্যোক্তা, সরকারি/বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পর্যটন সুবিধাভোগী এবং পর্যটকদের সচেতনতা বৃদ্ধি ও কার্যকর ভূমিকা রাখার আহবান জানানো হয়।  

দিবসটিকে সামনে রেখে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, টোয়াব, আটাব, টিডাব, ট্রিয়ার, পাটা বাংলাদেশ চ্যাপ্টার, বিডি ইনবাউন্ড, বি এফ টি ডি, বিহা, বি এস এল, হিল, ট্যুরিস্ট পুলিশ, এ টি জে এফ বি, ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও  সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ, ঢাকা ইউটিভার্সিটি ট্যুরিস্ট সোসাইটি (ডাটস), তারকামানের হোটেলসমূহ, বি কিউব ফাউন্ডেশন, প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়া এবং পর্যটন বিষয়ক ম্যাগাজিনসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট সকল স্টেকহোল্ডারদের অংশগ্রহণে ঢাকায় ও ঢাকার বাইরে পর্যটন আকর্ষনীয় জেলাসমূহে বিভিন্ন কর্মসূচী পালিত হচ্ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো র‌্যালী, জাতীয় সংবাদপত্র সমূহে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ও সচিব, বাংলাদেশ পর্যটনকরপোরেশন-এর চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডেও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার বাণী সম্বলিত বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ, পর্যটন বিষয়ক বিতর্ক প্রতিযোগিতা, ফটোগ্রাফী এক্সিবিশন, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের সকল হোটেল-মোটেলসহ তারকামানের হোটেল-মোটেল, রিসোর্টসমূহে খাদ্য ও আবাসনের ওপর বিশেষ ছাড়, সড়কদ্বীপ সজ্জা, আলোকসজ্জা, খাদ্য উৎসব, ব্যানার, ফেস্টুন, বেলুন ওড়ানো।

বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন মৎস্য ভবনের সম্মুখের সড়ক হাইকোর্ট চত্ত্বর হয়ে টিএসসি পর্যন্ত বর্ণাঢ্য র‌্যালীর আয়োজন করে। এছাড়াও বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন বিভিন্ন বিভাগীয় শহরসহ জেলাসমূহে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় র‌্যালী, সেমিনার আয়োজন করেছে।  ঢাকায় অনুষ্ঠিত র‌্যালীর প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের 

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব রাশেদ খান মেনন, এমপি, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মেন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জনাব ফারুক খান, এম,পি, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান জনাব অপরূপ চৌধুরী, পিএইচ,ডি, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী জনাব আখতারুজ জামান খান কবীর সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ।
বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত র‌্যালীটি শুভ উদ্বোধন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের  বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী  জনাব রাশেদ খান মেনন, এম,পি। মাননীয় মন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বলেন যে, শত কোটি পর্যটক শত কোটি সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করতে পারে। যদিও আপাত:দৃষ্টিতে ছোট ছোট পদক্ষেপকে অপর্যাপ্ত মনে হতে পারে, কিন্তু একটি দায়িত্বশীল কাজের শত কোটি ব্যাপকতা সৃষ্টি করতে পারে। শত কোটি পর্যটক অবশ্যই শত কোটি বৈশ্বিক প্রতিনিধি প্রতিনিধি হতে পারেন - একটা সংঘবদ্ধ, বৈশ্বিক শক্তি যা আমাদের এই পৃথিবীটাকে আর এর মানুষদের ভবিষ্যত সুরক্ষায় অবদান রাখতে পারেন।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জনাব ফারুক খান, এমপি তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তবে বলেন যে, আমরা যখনই ভ্রমণ করি না কেন, তা সে যে কারণেই হোক, আমরা কিন্তু বৈশ্বিক গতিশীলতারই অংশ; এমন একটা গতিশীলতা যা সামগ্রিক উন্নয়নের, আমাদের ভবিষ্যত-স্থিতিশীল সমাজ নির্মাণে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সামর্থ্য রাখে, যা পারস্পরিক সৌহার্দ্য সৃষ্টিতে এবং আমাদের প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় অবদান রাখে।
বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান জনাব অপরূপ চৌধুরী, পিএইচ,ডি তাঁর বক্তব্যে বলেন, প্রযুক্তি ও সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ প্রকৃতি নির্ভর পর্যটন উন্নয়নের মাধ্যমে প্রাকৃতিক সম্পদ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্বের দীর্ঘতম নিরবচ্ছিন্ন সমুদ্রসৈকত-কক্সবাজার, একক বৃহত্তম  ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল-সুন্দরবন, সমুদ্র কন্যা-কুয়াকাটা, প্রবাল দ্বীপ-সেন্টমার্টিন, হাকালুকী ও টাংগুয়া হাওর ইত্যাদি সংরক্ষণ করে প্রাকৃতিক পর্যটন গন্তব্য হিসেবে বিশ্বমানচিত্রে বাংলাদেশকে সুপরিচিত করতে হবে। এছাড়াও প্রকৃতি নির্ভর পর্যটন উন্নয়নকে উৎসাহিত করা উচিৎ যাতে প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের পাশাপাশি এর মাধ্যমে অর্জিত আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে সচেতনতা বৃদ্ধি পায় এবং উৎসাহ  উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে আরো বলেন যে, বিশ্বে বর্তমানে এক বিলিয়নেরও বেশী পর্যটক ভ্রমণের ফলে ভ্রমণকৃত স্থানসমূহে সৃষ্টি হয়েছে কর্ম সম্ভাবনা। এ সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগানো গেলে অর্জন হতে পারে অর্থনৈতিক সাফল্য, দূর হতে পারে বেকারত্ব সমস্যা। এ বিষয়ে তিনি পর্যটন শিল্পের উদ্যোক্তা, সরকারি/বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পর্যটন সুবিধাভোগী এবং পর্যটকদেও সচেতনতা বৃদ্ধি ও কার্যকর ভূমিকা রাখার আহবান জানান।

বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড ও বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন কর্তৃক আয়োজিত বর্ণাঢ্য কেন্দ্রীয় র‌্যালীতে টোয়াব, টিডাব, আটাব, ট্রিয়াবসহ বিভিন্ন পর্যটন সংগঠন ছাড়াও সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীগণ, জাতীয় পর্যটন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটসমূহের শিক্ষার্থীগণ এবং বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট পুলিশ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে।

দিবসটি উপলক্ষে বিকেলে ঢাকায় হাতির ঝিলে ট্যুরিস্ট পুলিশ, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন এবং বাংলাদেশ রোয়িং ফেডারেশনের সহায়তায় বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড একটি নৌকা বাইচের আয়োজন করেছে। এছাড়া ৪ টি ঘোড়ার গাড়ীতে সংগীত শিল্পীদের উপস্থিতিতে বিকাল ৩ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত এই এলাকায় উতসবমূখর পরিবেশ তৈরীর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নৌকা বাইচের উদ্বোধন করবেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব রাশেদ খান মেনন, এম পি। একই সাথে দেশের বিভিন্ন পর্যটন আকর্ষণ ও সকল জেলাসমূহে আলোচনা সভা, সমাবেশ ও র‌্যালির আয়োজন করা হবে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন ও সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে।