Wellcome to National Portal
বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০

পটুয়াখালী জেলা

ক) ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্বিক ও স্থাপত্য

 

পর্যটন আকর্ষণের নাম ও বর্ণনা

 

১. অতিপ্রাচীন কূয়া :

যে ‘কূয়া’ বা কূপ খননের কারণে এ স্থানের নাম ‘কুয়াকাটা’ হয়েছে এটি তারই একটি। কুয়াকাটা নামকরণ সম্পর্কে জানা যায় যে, ১৭৮৪ সালে বর্মী রাজা ‘বোদোফায়া’ কর্র্তৃক মাতৃভূমি আরাকান থেকে বিতাড়িত হয়ে বহু রাখাইন নৌকাযোগে বঙ্গোপসাগরের তীরের রাঙ্গাবালি দ্বীপে অবতরণ করে। পরবর্তীতে তারা এ অঞ্চলে বসতি গড়ে তোলে এবং পানযোগ্য মিঠাপানির জন্য এই কূপ খনন করে। আর এ কূপ খনন বা স্থানীয় ভাষায় ‘কূয়া’ ‘কাটা’ থেকেই এই স্থানের নাম হয় কুয়াকাটা।

 

খ) ধর্মীয়

পর্যটন আকর্ষণের নাম ও বর্ণনা

 

১. সীমা বৌদ্ধমন্দির :

সমুদ্র সৈকতের কাছে কেরানিপাড়ায় অবস্থিত এই মন্দিরটি ঠিক  কবে  প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা সঠিকভাবে জানা না গেলেও এটি যে বেশ প্রাচীন তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। মন্দিরের ভিতরে প্রায় ৩ ফুট উঁচু বেদীর উপর সাড়ে ৩৭ মণ ওজনের অষ্টধাতু নির্মিত একটি ধ্যানমগ্ন বুদ্ধমূর্তি রয়েছে। জনৈক প্রয়াত বৌদ্ধভিক্ষু উপেংইয়া মূর্তিটি স্থাপন করেছেন বলে জনশ্র“তি রয়েছে। কাঠ ও টিনের তৈরী সুদৃশ্য মন্দিরটির নির্মাণশৈলী ইন্দোচীনের অনুকরনে নির্মিত।

 

২. সুবিশাল বুদ্ধমূর্তি :

কুয়াকাটা থেকে ৮ কিঃমিঃ পূর্বে রাখাইন জনবসতি মিশ্রিপাড়ায় রয়েছে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় বুদ্ধমূর্তি।

 

 

গ) সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা

 

পর্যটন আকর্ষণের নাম ও বর্ণনা

 

১. রাখাইন পল্লী:

কুয়াকাটা ও কলাপাড়ার আদিবাসিন্দা এই রাখাইন সম্প্রদায়। এককালে এ অঞ্চলে রাখাইনদের একচ্ছত্রাধিপত্য থাকলেও আজ তারা সংখ্যা লঘু। তথাপি তাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও বর্ণাঢ্য সংস্কৃতি ধরে রেখেছে এই রাখাইন পল্লীকে ঘিরে। এখানে গেলে খুব কাছ থেকে এই নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠির জীবনাচার নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায়।

 

 

ঘ) উৎসব সম্পর্কিত :

 

পর্যটন আকর্ষণের নাম ও বর্ণনা

 

১. রাসমেলাঃ

রাসমেলা মণিপুরীদের একটি প্রধান ধর্মীয় অনুষ্ঠান হলেও কালক্রমে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরাও কার্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এ উৎসব পালন করে থাকে। মৌলভীবাজার ও সুন্দরবনের  ন্যায় কুয়াকাটায়ও যথাযথ ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা ও আনন্দ উৎসবে তিন দিনব্যপী রাসমেলা পালিত হয়। এ সময়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হাজার হাজার মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। মেলার শেষ দিনে খুব ভোরে  সাগরের প্রথম জোয়ারে পূণ্যার্থী নরনারীর পূণ্যস্নানের মধ্যদিয়ে শেষ হয় এই মেলা বা উৎসব।

 

 

ঙ) নৌ-পর্যটন

 

পর্যটন আকর্ষণের নাম ও বর্ণনা

 

১। সমুদ্র  ভ্রমণ :

কুয়াকাটা সহতে জলপথে সোনারচর, গঙ্গামতির চর, লেবু চর ও ফাতরার চরের মধ্যে ভ্রমণ করা য়ায়।

 

চ) প্রাকৃতিক

 

পর্যটন আকর্ষণের নাম ও বর্ণনা

 

১. কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত :

দেশের সর্ব দক্ষিণে পটুয়াখালী জেলায় কলাপাড়া উপজেলায় অবস্থিত কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত  অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। ১৮ কিঃমিঃ দীর্ঘ এই সমুদ্র সৈকতের  পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে বিশাল  সংরক্ষিত বনাঞ্চল, উত্তরে কলাপাড়া জনপদ, দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। এই সীমাপরিবেষ্ঠিত কুয়াকাটা অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের  এক অনুপম লীলাভূমি। সুবিস্তৃত সৈকত আর বালিয়াড়ির বুকে দাঁড়িয়ে একমাত্র কুয়াকাটা থেকেই সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত উপভোগ করা যায়। মূলত এসবের আকর্ষণেই প্রতিবছর দেশবিদেশের অগণিত পর্যটক আগমন করে থাকেন সাগরকন্যা কুয়াকাটায়।

 

২. নারিকেল কুঞ্জ ও ঝাউবন :

সমুদ্র সৈকতের একেবারে কোল ঘেঁষে প্রায় ২০০ একর জায়গায় ষাটের দশকে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা হয় এই নারিকের কুঞ্জ। নারিকেল কুঞ্জের পূর্ব র্পাশ্বে  বনবিভাগ কর্তৃক ১৫ হেক্টর গড়ে তোলা হয়েছে চমৎকার মনলোভা এই ঝাউবন। সমুদ্র সৈকত থেকে গোধুলি বেলা বা জোৎস্না রাতে  নারিকেল কুঞ্জ ও ঝাউবনের দিকে আকালে রোমাঞ্চকর অনুভূতির সৃষ্টি হয়।

 

৩. ফাতরার চর :

সমুদ্র সৈকতের পশ্চিম দিকে গেলে ঘোলাজলের একটি ছোট নদী ও সাগর মোহনার কাছে পাওয়া যাবে ফাতরার চর নামক প্রায় ৯,৯৭৬ একর আয়তনের এই সংরক্ষিত ম্যানগ্রোভ বন। পর্যটকদের কাছে এটি ‘দ্বিতীয় সুন্দরবন’ হিসেবে পরিচিতি ও খ্যাতি পেতে শুরু করেছে। কেওয়া, গেওয়া, সুন্দরী, বাইন, গড়ান, গোলপাতা প্রভৃতি ম্যানগ্রোভ  প্রজাতির উদ্ভিদ এবং বানর, শূকরসহ অসংখ্য জীবজন্তু ও পাকপাখালি সমৃদ্ধ এ বনাঞ্চল।

 

৪. সোনারচর :

পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলাধীন চরমোন্তাজ ইউনিয়নে বুড়িগৌরাঙ্গ নদীর মোহনায় সাগরবক্ষে বিগত শতকের ষাটের দশকে এই চর জেগে উঠে। এর অবস্থান গলাচিপা উপজেলা সদর হতে ৩০ কিঃমিঃ দক্ষিণে এবং কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত হতে ২০ কিঃমিঃ পূর্বে। প্রায় ৯৫ বর্গ কিঃমিঃ আয়তনের এই চরে রয়েছে সাগর আর বেলাভূমি এবং ২০ কিঃমিঃ দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত। সৈকতে দেখা মেলে ঝাঁকে ঝাঁকে লাল কাঁকড়া এবং ডিম পাড়তে আশা সামুদ্রিক কচ্ছপের। সোনারচর জুড়ে বন বিভাগের রোপিত নয়নাভিরাম বৃক্ষরাজির বনে  দেখা যায় বিরল প্রজাতির হরিণ ও বানর । তাছাড়াও বনে চিতাবাঘ, মেছোবাঘ বনমোরগ, বুনো মহিষএবং নানান প্রজাতির পাখি দেখা মেলে যা আগত পর্যটকদের মুগ্ধ করে। সোনার চরের একই স্থানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের বিরল দৃশ্য উপোভোগ করা যায়।

 

৫. গঙ্গামতির চর :

কুযাকাটা মূলভূখন্ডের  পূর্বদিকে প্রায় ১০ কিঃমিঃ দূরে অবস্থিক গঙ্গামতির চর পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান। এটি স্থানীয়ভাবে ‘গঙ্গামতির লেক’ নামে পরিচিত। মূলতঃ এই স্থানে দাঁড়িয়েই পর্যটকগণ সূর্যোদয়ের অপরূপ দৃশ্য উপভোগ করে থাকেন। এই চরে রয়েছে কেওড়া, গেওয়া,ছইলা খৈয়া ইত্যাদি হরেক রকমের গাছপালা এবং বুনো শুয়োর, বন মোরগ ও বিভিন্ন প্রকার পাখি।

 

৬. ইকোপার্ক :

কুয়াকাটা সমূদ্র সৈকতের পূর্ব পার্শ্ব বরাবর বনবিভাগের সৃজিত প্রায় ৪০০০ একর জায়গা জুড়ে বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা বন্যপ্রাণী সমৃদ্ধ একটি ছায়াসুনিবিড় পিকনিক স্পট। এখানে রয়েছে বন বিভাগের বিট অফিস ও চমৎকার একটি রঙ্গিন কাঠের সেতু। ইকোপার্ক সংলগ্ন সাগরের বালুভূমিতে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন ঝাউবন। পর্যটকদের নিকট এস্থানটি খুবই আকর্ষণীয়।

 

ছ) গ্রামীণ

 

পর্যটন আকর্ষণের নাম ও বর্ণনা

 

১. শুটকি পল্লীঃ

কুয়াকাটা থেকে  পশ্চিমে ৪ কিঃমিঃ দূরে অবস্থিত কুয়াকাটা শুটকি পল্লী। সারাবছর বিশেষ করে  শীতকালে জেলেরা সাগর থেকে নানা প্রজাতির সামদ্রিক মাছ ধরে এখানে শুকিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে। পর্যটকদের জন্য বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য এটি একটি শিক্ষণীয় স্থান।