সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ৮ সেপ্টেম্বর ২০২০
মুন্সিগঞ্জ জেলা
ক) ঐতিহাসিক , প্রত্নতাত্ত্বিক ও স্থাপত্য নিদর্শনঃ পর্যটন আকর্ষণ :
১. ইদ্রাকপুর দূর্গ :
শহরের প্রাণকেন্দ্র পুরনো কাচারি এলাকায় ইছামতি নদীর তীরে ১৬৬০ সালে মোঘল সুবেদার মীর জুমলা জলদস্যুদের গতিবিধি লক্ষ্য রাখার উদ্দেশ্যে এটি নির্মাণ করেছিলেন। ইহার নির্মাণশৈলী মোঘল সাথাপনার
অনুরূপ। এই কেল্লাটি ইট, চুন এবং সুরকী দ্ধারা নির্মিত। বর্তমানে কেল্লাটি জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে। এর পরিমাপ ৮৭ মি ৭৭ মি.। চারদিকে রয়েছে ৬মি. উচু ও ৪ মি. পুরু ইটের দেয়াল। দেয়ালের উপরের দিকে ফুলেল পাপড়ি আকারে নির্মিত হয়েছে। দুর্গের বাইরে একটি পুকুর আছে। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী এ দুর্গের সাথে কেল্লা-লালবাগের একটি সুরঙ্গ পথের মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করা হত।
২. বল্লাল সেনের বাড়ি ও দীঘি :
রামপালে এর অবস্থান। বাড়ির অস্থিত্ব নেই। দীঘিটির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ উভয়ই প্রায় ১.৬ কি.মি.। এ দীঘির প্রাকৃতিক দৃশ্য অত্যন্ত মনোরম ও উপভোগ্য।
৩. বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসুর বাড়ি :
মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার রাঢ়ীখালি গ্রামে অবস্থিত। প্রায় ১০.১২ হেক্টর জায়গা জুড়ে বিজ্ঞানী আচার্য জগদীশচন্দ্র বসুর পিতৃপুরুষদের ভবন। ইট-সুরকিতে তৈরী ভবনটি ৮টি পুকুর এবং প্রচুর গাছগাছালিতে ঘেরা। এক প্রান্তের একটি কোঠা জাদুঘর হিসেবে সংরক্ষিত।
৪. সাহিত্যিক মানিক বন্দোপাধ্যায়ের বাড়ি :
প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক মানিক বন্দোপাধ্যায়ের বাড়ি।
৫. বজ্র যোগিনী গ্রাম :
বৌদ্ধ পন্ডিত, ধর্মগুররু ও দার্শনিক দশম-একাদশ শতকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী অতীশ দীপঙ্কর ৯৮০- ৯৮৩ এর মধ্যে ঢাকার বিক্রমপুরের ব্রজযোগিনী গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। এখানে রয়েছে বাড়িটির
ধবংসাবশেষ।
খ) ধর্মীয় পর্যটন পণ্য : পর্যটন আকর্ষণ :
১. কাজী কসবার মসজিদ :
কাজী কসবা গ্রামে এটি অবস্থিত। এটি পুরানো মসজিদ। মসজিদটি পনের শতকে নির্মিত হয়েছিল ।
২. বাবা আদমের মসজিদ :
এ ঐতিহাসিক মসজিদ মুন্সিগঞ্জ শহরের ৬.৫ কি.মি. উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। মসজিদের অভ্যন্তরভাগ ৬.৬৪ মিটার ও ১০.২৩ মিটার পরিমাপে। চারপাশে ১.৮৫ মিটার উঁচু দেয়াল আছে। মসজিদটি ছয় গম্বুজ বিশিষ্ট। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী ১১৫৮-৭৯ সালে কোন এক সময়ে বাবা আদম নামে একজন আরবি ভাষী পীর ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে এখানে এসেছিলেন। দরগা বাড়ি নামক স্থানে রয়েছে বাবা আদমের মাজার।
৩. বার আওলিয়ার মাজার :
মুন্সিগঞ্জ শহরের ৪.৫ কি.মি. দক্ষিণে কেওগা নামের গ্রাম। এই গ্রামে একটি মাজার আছে। মাজারটি সংস্কারের সময় একটি শিলালিপি পাওয়া যায়। শিলালিপিতে কলেমা তৈয়বাসহ বার জন সুফীসাধকের নাম
উৎকীর্ণ আছে। এখানে উল্লেখ্য, প্রতি বছর ৯ মহরম এ মাজারে বিশাল সমাবেশ আয়োজিত হয়।
৪. সোনারঙ মন্দির :
টঙ্গীবাড়ি উপজেলার সোনারং গ্রামে এর অবস্থান। একটি বাঁধানো মঞ্চের উপর ইট ও চুনসুরকি দিয়ে নির্মিত দুটি মন্দির রয়েছে। একটি শিব ও অন্যটি কালি মন্দির। প্রত্যেকটির সামনে একটি বারান্দাসহ মূল মূর্তিকোঠা রয়েছে।
গ) উৎসব সম্পর্কিত: পর্যটন আকর্ষণ :
১. মাঘি পুর্ণিমা মেলা :
রাজা হরিসচন্দ্রের একটি দীঘি রয়েছে, যা এখনও রহস্যাবৃত। মাঘী পূর্ণিমার রাতে অলৌকিকভাবে এটি পানিতে ভরে যায় অথচ সারা বছরই এটি শুকনো থাকে। মাঘী পূর্ণিমার সময়ে এখানে মেলা বসে তখন পুণ্যার্থী আর সাধারণ পর্যটকদের কাছে গোটা এলাকা হয়ে ওঠে আকর্ষণীয়।
২. নৌকা বাইচ :
দেশজ সংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য নৌকাবাইচের বিশাল উৎসব প্রতিবছর মুন্সিগঞ্জের ধলেশ্বরী নদীতে অনুষ্ঠিত হয়। এ উৎসবে লাখো লাখো মানেষির ঢল নামে। বন্দর নগরী মিরকাদিম থেকে মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘট
পর্যন্ত এ নৌকাবাইচের আয়োজন করা হয়।
চ) নৌ-পর্যটন : পর্যটন আকর্ষণ :
১. ধলেশ্বরী নদীতে নৌ-বিহার :
মুন্সিগঞ্জে এলে ধলেশ্বরী নদীতে নৌ-ভ্রমণ করা যায়। ধলেশ্বরী নদীতে তাকালে দেখা যাবে জেলেদের মাছ ধরার অপূর্ব দৃশ্য। যা পর্যটকদের সত্যিই বিমোহিত করে।
ছ) প্রাকৃতিক : পর্যটন আকর্ষণ :
১. রামপালের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য :
চন্দ্রসেন পালদের আমলে বাংলার রাজধানী ছিল রামপালে। রামপালের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সত্যিই নয়নাভিরাম। সর্বত্রই যেন সবুজে ঢাকা। রামপালের কলার সুখ্যাতি সর্বজন বিদিত।
জ) গ্রামীণ, কৃষি ও স্থানীয় ঐতিহ্য : পর্যটন আকর্ষণ :
১. সিরাজদিখানের পাতক্ষীরা :
সিরাজদিখানের পাতক্ষীরা মিস্টি জাতীয় খাবারের অনেক নামডাক রয়েছে। তবে ফার্স্ট ফুড খাবারের প্রতিযোগিতায় তা হারিয়ে যেতে বসেছে।