সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১st মার্চ ২০২০
নীলফামারী জেলা
ক) ঐতিহাসিক, প্রত্নতাত্ত্বিক ও স্থাপত্য নিদর্শন
পর্যটন আকর্ষণের নাম ও বর্ণনা
নাটখানা:
নীলফামারী সদরে কুষ্ঠ হাসপাতালের দক্ষিণ পামে এই নীলকুঠিরটি অবস্থিত। কোম্পানির শাসনামলে স্থানীয় কৃষকদের এখানে ধরে এনে অত্যাচার করে নীল চাষে বাধ্য করা হতো। নির্যাতিত কৃষকদের আন্দোলনের ফলে নীলফামারীর বুক থেকে নীলচাষ বিদায় নিলেও কালের সাক্ষী হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে এ নীলকুঠি, যাকে স্থানীয়ভাবে বলা হয় নাটখানা।
রাজা হরিশচন্দ্র পাট:
নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা সদর থেকে ২০ কিমি উত্তর-পূর্ব দিকে রাজা হরিশচন্দ্রের পাট বা ধাপ নামে একটি ঢিবি আছে। কথিত আছে হরিশ চন্দ্র নামে এক রাজা এখানে রাজত্ব করতেন। প্রাচীন কালের নির্দশন হিসাবে বড় বড় বেশ কিছু পাথর দেখা যায়। ঐতিহাসিকদের ধারণা মাটির ঢিবিতে ঐতিহাসিক স্থাপনা লুকিয়ে আছে। খ্রীষ্টান কবরস্থাননীলফামারী জেলার সৈয়দপুর রেল স্টেশন থেকে ১কিমি দুরে কয়া মৌজার ইসলামবাগে এই সমাধিক্ষেত্র অবস্থিত। কোম্পানী আমলে নির্মিত এই সমাধিক্ষেত্রে অনেক গণ্যমান্য ইংরেজ ও কুক্ষ্যাত নীলকরদের সমাধি রয়েছে।
খ) ধর্মীয়
পর্যটন আকর্ষণের নাম ও বর্ণনা
আঙ্গোরা মসজিদ ও মাজার:
সৈয়দপুর-নীলফামারী সড়কের দারোয়ানী থেকে খানসামাগামী সড়কে ৫কিমি দুরে সড়কের পাশেই আঙ্গোরা মসজিদ ও মাজার অবস্থিত। নিত গম্বুজ বিশিষ্ঠ এ মসজিদটি মোগল স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত। মসজিদ সংলগ্ন দুইটি পাকা কবর রয়েছে।
চিনি মসজিদ:
সৈয়দপুর রেল স্টেশন থেকে ১কিমি দুরে কয়া মৌজার ইসলামবাগে এই মসজিদটি অবস্থিত। ১৮৬৩ সনে অতীব আকর্ষণীয় মসজিদটি নির্মিত হয়। মসজিদটির দেয়াল চিনামাটির পাথর দিয়ে আবৃত বলে এর নাম হয়েছে চিনি মসজিদ। সমগ্র মসজিদে ছোট বড় মিলিয়ে ৪২ টি বিভিন্ন উচ্চতার ছয়কোণী মিনার আছে। এ মসজিদের নির্মানশৈলী অভিনব ও দৃষ্টিনন্দন।
হাজী তালেঙ্গা বসুনীয়া মসজিদ:
নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলায় এ মসজিদটি অবস্থিত। তিন গম্বুজ বিশিষ্ট প্রাচীন এ মসজিদটি ১৭৯৫ সনে প্রতিষ্ঠিত। মোঘল স্থাপত্য রীতিতে নির্মিত এ মসজিদটিতে চুন সুরকি ব্যবহার করা হয়েছে।
ক্যাথলিক গীর্জাঃ
সৈয়দপুর রেল স্টেশনের পাশেই রোমান ক্যাথলিক চার্চ অবস্থিত। ইউরোপীয় স্থাপত্য রীতিতে নির্মিত এ চার্চটি উত্তরাঞ্চলে প্রাচীনতম চার্চগুলির অন্যতম।
গ) সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলক
পর্যটন আকর্ষণের নাম ও বর্ণনা
মুর্তজা ইনিস্টিটিউটঃ
সৈয়দপুর রেল স্টেশনের পাশেই মুর্তজা ইনিস্টিটিউট অবস্থিত। ১৮৭০-এ সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা স্থাপনের পরেই এখানে বসবাসকারী রেলওয়ে কারখানায় কর্মরত বৃটিশ সাহেবদের চিত্রবিনোদনের জন্য নির্মিত হয় দি ইউরোপিয়ান ক্লাব (১৮২৮)। ১৯৩০ পর্যন্ত এ ক্লাবে ভারতীয়দের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিলো। দেশ বিভাগের পর কিছুদিন এ প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল দি আর সিং ক্লাব। পরবর্তীকালে এ ক্লাবের নাম দেওয়া মুর্তজা ইনিস্টিটিউট। এক সময় এ ক্লাব সমগ্র সৈয়দপুরের সহিত ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতো। এ প্রতিষ্ঠানের গ্রন্থাগারটি বিভিন্ন দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থে সমৃদ্ধ ছিল।
নীলফামারী জাদুঘরঃ
এই জাদুঘরটি জনাব এ টি এম মজিবর রহমান ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠা করেন।এ জাদুঘরে সংরক্ষিত দ্রব্যাদির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে প্রাচীন মুদ্রা, ১৭ কেজি ওজনের তালা, তাজহাট জমিদারের ব্যবহৃত পোশাক, তিনশত বছরের পুরনো নৌকা, টেরাকোটার কাজ করা ইট ইত্যাদি।
ঘ) প্রাকৃতিক
পর্যটন আকর্ষণের নাম ও বর্ণনা
নীলসাগরঃ
নীলফামারী সদর উপজেলায় পোড়াগ্রাম ইউনিয়নে এ বিশাল দীঘিটি অবস্থিত। কথিত আছে রাজা বিরাট কয়েকশত পূর্বে এ দীঘি খনন করেন। নীলসাগরের আয়তন ৫৩.৯০ একর। দীঘির পাড়ে অনেক বনজ, ফলজ ও ঔষধি গাছ রয়েছে। এ দীঘিতে শীতকালে প্রচুর অতিথি পাখির আগমন এবং কলকাকলিতে এই এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে। দুর-দুরান্ত থেকে অনেক পর্যটক পাখী পর্যক্ষেণ ও আনন্দ বিহারে এখানে আসেন।