ক) ঐতিহাসিক, প্রত্নতাত্ত্বিক ও স্থাপত্য: পর্যটন আকর্ষণ:
১. সন্তোষ জমিদার বাড়িঃ
টাঙ্গাইল শহর থেকে ২ মাইল দুরে সন্তোষ জমিদার বাড়ি। সড়ক পথে রিক্সায় যাওয়া যায়। সন্তোষ জমিদার বাড়িটি এক বিরাট দীঘির পাশে অবস্থিত। অপরূপ কারুকার্য খচিত জমিদার বাড়িটি খুবই আকর্ষণীয়।
২. সুলতান গিয়াস উদ্দিন শাহের কবরঃ
টাঙ্গাইল শহর হতে ১ মাইল দুরে পিসি সরকারের বাড়ির কিছু দুরে একটি পাকা সমাধির ধ্বংসাবশেষ আছে। অনেকের মতে এটি সুলতানের কবর। আবার কেউ কেউ এ কবরটিকে বাংলার সুলতান হোসেন শাহ’র কনিষ্ঠপুত্র সুলতান গিয়াস উদ্দিন মাহমুদ শাহের কবর বলে অভিহিত করেন।
৩. নওয়াব মঞ্জিলঃ
মধুপুরের সন্নিকটে ধনবাড়ি মসজিদ ও নওয়াব বাড়ি অবস্থিত। নওয়াব মঞ্জিল, মরহুম নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী ধর্মীয় ও দাতব্য কাজে সহযোগিতার জন্য ১৯২৯ সালে ৮ এপ্রিল মধুপুর উপজেলার কিসমত ধনবাড়ি, বর্ণী চন্দবাড়ি, কয়রা, মুসুদ্ধি ও কেরামজানি মৌজার ৮৮ একর ১২ শতাংশভূমি ‘নওয়াব আলী খোদাবক্স ওয়াক এস্টেট’ নামে ওয়াকফ করে দিয়ে যান। ধনবাড়ি, নওয়াব বাড়ির দৃষ্টি নন্দন স্থাপত্যগুলোর মধ্যে নওয়াব মঞ্জিলটি ছিল নওয়াব সাহেবের প্রাচীন আবাস কক্ষ। কারুকার্য খচিত এই ভবনটির ভিতরে নবাবী আমলের আসবাবপত্র রয়েছে।
৪. দেলদুয়ার ও করটিয়া জমিদার বাড়িঃ
টাঙ্গাইল দেলদুয়ার ও করটিয়া জমিদার বাড়িতে বিয়ে হয়েছিল বেগম রোকেয়ার বড় বোন করিমুনেছার। বর্তমানে এ জমিদার বাড়িটি একটি সংরক্ষিত পুরাকীর্র্তি।
৬. ঘাটাইল সাগর দীঘিঃ
ঘাটাইল উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় ধলাপাড়া হতে ১০ মাইল দুরে সাগর দীঘি অবস্থিত। পঞ্চদশ শতকে পাল রাজাদের একজনের নাম ছিল সাগর রাজ বা সাগর পাল। এ প্রভাবশালী রাজা কর্তৃক একটি প্রকান্ড দীঘি খনন করা হয়েছিল বলেই এটির নাম হয়েছে সাগর দীঘি। এখানে ছিল গুপ্ত বৃন্দাবন যা শ্রী চৈতন্যদেবের সম-সাময়িক বৈষ্ণব ভক্ত মাধবাচার্য সংস্কার করেছিলেন। সাগর দীঘি গুপ্ত বৃন্দাবনের এক বিষ্ময়কর গুপ্ত স্থান।
খ) ধর্মীয়ঃ পর্যটন আকর্ষণঃ
১. আতিয়া মসজিদঃ
টাঙ্গাইল শহর থেকে ৮ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে লৌহজং নদীর পূর্ব পাড়ে এ ঐতিহাসিক মসজিদটি অবস্থিত। ১৬০৮ সালে পীর আলী শাহানশাহ শাহ বাবা কাশ্মীরি নামে একজন আধ্যাত্মিক পুরুষের সম্মানে স্থানীয় পল¬ী পরিবারের বায়জিদ খানের আত্মজ সাঈদ খান মসজিদটি নির্মাণ করে ছিলেন। এ মসজিদের স্থাপত্যে প্রাক মোঘল প্রথাসিদ্ধ স্থাপত্য রীতির অপূর্ব সমন্বয় রয়েছে। মসজিদের পশ্চিম পাশের উত্তর-দক্ষিণে একটি লম্বা দীঘি ও পূর্বদিকের অঙ্গনে একটি মাজার রয়েছে। একটি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি।
২. তীর্থ দীঘিঃ
সাগর দীঘি থেকে ২ মাইল দূরে গুপ্ত বৃন্দাবন ছাড়াও ইন্দুপালের বাড়ি ও তাঁর তীর্থ দীঘিসহ অন্যান্য কীর্তি দেখা যায়।
গ) নৌ-পর্যটনঃ পর্যটন আকর্ষণঃ
১. যমুনা নদীতে নৌ-ভ্রমণঃ
ব্রক্ষ্রপুত্র-যমুনা বাংলাদেশে দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং বিশ্বের দীর্ঘতম নদীসমূহের মধ্যে অন্যতম। তিব্বত, চীন, ভারত এবং বাংলাদেশের ভূ-খন্ডে জুড়ে রয়েছে এর অববাহিকা অঞ্চল। যমুনা নদী দ্বারা বিভক্ত
বাংলাদেশের পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চলকে সংযুক্ত করার লক্ষ্যে যমুনা নদীর উপর সম্প্রতিকালে ৪.৮ কিমি দীর্ঘ একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এ সেতুর নামকরণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু যমুনা বহুমুখী সেতু। উক্ত সেতু
সংলগ্ন ইব্রাহীমাবাদ রেলওয়ে ষ্টেশনের অদূরে এলেঙ্গা নামক স্থানে যমুনা পাড়ের ১৫৬.৬৫ হেক্টর জমি জুড়ে যমুনা রিসোর্ট। এর পাশ জুড়ে যমুনার উদাম বুকে ধবল বালুর চর। নদীতে নানান ধরণের নৌকা চলে। পাড়ে পাড়ে কাশবন। সেখানে জানা-অজানা পাখীদের মেলা।
ঘ) প্রাকৃতিকঃ পর্যটন আকর্ষণঃ
১. শালবনঃ
শালবন এক ধরণের বনভূমি যেখানে শালগাছ মূখ্য উদ্ভিদ প্রজাতি। বনের শ্রেণী বিন্যাসে শালবনকে গ্রীষ্মমন্ডলীয় আর্দ্র পত্রঝরা বনাঞ্চলের অন্তর্ভূক্ত করা হয়। বাংলাদেশে মোট শালবন এলাকা প্রায় ১,২১,০০০ হেক্টর যা দেশের মোট বনভূমির শতকরা ৩২ ভাগ। শালবন দেশের মাত্র কয়েক জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে ছড়ানো। বেশীর ভাগ বনাঞ্চল রয়েছে গাজীপুর, ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল জেলায়। এ বনাঞ্চলটি ভাওয়ালের গড় ও মধুপুর গড় নামে পরিচিত। বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইলের শালবন এলাকা সবচেয়ে বড়, ব্রক্ষ্রপুত্র এবং যমুনা নদীর মাঝে উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত এ বনভূমির দৈর্ঘ্য প্রায় ৯৬ কিমি এবং চওড়া ৮ থেকে ২৪ কিমি।
২. যমুনা নদীঃ
ব্রক্ষ্রপুত্র-যমুনা বাংলাদেশে দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং বিশ্বের দীর্ঘতম নদীসমূহের মধ্যে অন্যতম। তিব্বত, চীন, ভারত এবং বাংলাদেশের ভূ-খন্ডে জুড়ে রয়েছে এর অববাহিকা অঞ্চল। যমুনা নদী দ্বারা বিভক্ত বাংলাদেশের পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চলকে সংযুক্ত করার লক্ষ্যে যমুনা নদীর উপর সম্প্রতিকালে ৪.৮ কিমি দীর্ঘ একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এ সেতুর নামকরণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু যমুনা বহুমুখী সেতু। উক্ত সেতু সংলগ্ন ইব্রাহীমাবাদ রেলওয়ে ষ্টেশনের অদুরে এলেঙ্গা নামক স্থানে যমুনা পাড়ের ১৫৬.৬৫ হেক্টর জমি জুড়ে যমুনা রির্সোট। এর পাশ জুড়ে যমুনার উদাম বুকে ধবল বালুর চর। নদীতে নানান ধরণের নৌকা চলে। পাড়ে পাড়ে কাশবন। সেখানে জানা-অজানা পাখীদের মেলা।