Wellcome to National Portal
বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১৯ নভেম্বর ২০১৯

কুমিল্লা জেলা

ক. ঐতিহাসিক, প্রত্নতাত্ত্বিক ও স্থাপত্য নিদর্শনঃ

 

১. ময়নামতিঃ

কুমিল্লা শহর থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার পশ্চিমে ময়নামতি অবস্থিত। ময়নামতিতে রয়েছে ৮ম শতকের পুরার্কীতির নিদর্শন। এখানে অসংখ্য প্রাচীন র্কীতির চিহ্ন রয়েছে। ময়নামতির উত্তর - দক্ষিনে রয়েছে  প্রায় ১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ২ কিলোমিটার প্রস্থ নিয়ে বিস্তৃত প্রাচীনকালের রোহিতগিরি যা লালমাটির পাহাড় নামে পরচিতি। এর উত্তরাংশ দশম শতকে দেব বংশের রাজা মানিক্য চন্দ্রর রাজধানীকে কন্দ্রে করে তার স্ত্রী মরণামতরি নামে নামকরণ করা হয় ময়নামতি।

 

২. শালবন বিহারঃ

লালমাই ময়নামতি গিরি শ্রেণীর মধ্যবর্তী স্থানে এই বিহারটি অবস্থিত। এই বিহারটির প্রত্যেক বাহুর দৈর্ঘ্য ৫৫০ ফুট, চারটি বাহুতে মোট ১১৫টি ভিক্ষু কক্ষ আছে যাতে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা বসবাস করতেন। এর মধ্যবর্তী স্থানে  রয়েছে বিশাল প্রবেশ দ্বার। উম্মুক্ত চত্বরে ক্রশাকৃতির প্রধান মন্দির। মূল বিহারটি দেব বংশের চতুর্থ রাজা বভদেব কর্তৃক আনুমানিক ৮ম শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছে। এটি সেসময় ধর্ম ও বিদ্যানুশীলনের পাদপীঠ ছিল। পাতলা ইটের চুন সুরকীতে তৈরী এই বিশাল বিহারটি বাইরে থেকে দূর্গের মত মনে হয়। শালবন বিহার খনন করে অসংখ্য মূল্যবান প্রত্নতত্ত্ব আবিস্কার করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে আছে ৮টি তাম্রলিপি, ১৮টি স্বর্ণ ও ৩৫০টি রৌপ্য মুদ্রা, স্বর্ণালংকার, নানা ধরণের মূর্তি, পোড়ামাটির বিএফলক, সীল ও নিত্য ব্যবহার্য দ্রব্য।

 

৩. লালমাই পাহাড়ঃ

কুমিল্লার ময়নামতি থেকে শুরু করে লালমাই পর্যন্ত বিস্তীর্ন অঞ্চলজুড়ে এই পাবর্ত্যভূমি। লালমাটির এই উপত্যকার এখানে সেখানে বসবাস করে অনেকগুলো উপজাতীয় ও বাঙালি পরিবার। এখানে হাটতে হাটতে চোখে পড়বে নাম না জানা লতাগুল্ম আর পাহাড়ে জুম চাষ। দেখা মিলতে পারে বনরুই, সজারু খরগোশ কিংবা শিয়াল।

 

৪. রূপবান মুড়াঃ

খৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে তৈরী লালমাই ময়নামতি পাহাড় শ্রেণীর এই প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানে একটি বিহার, একটি মন্দির, একটি ক্ষুদ্র স্তুপ, একটি উচ্চমঞ্চের স্থাপত্য নিদর্শনসহ মোট ৩৪টি ভিক্ষু কক্ষ রয়েছে। রূপবান মুড়ায় পাওয়া গেছে একটি দাড়ানো বুদ্ধ মূর্তি। কোমল পল্লপাথরে তৈরী এমন প্রমান আকারের বৌদ্ধ মূর্তি বাংলাদেশের অপর কোন মন্দির পাওয়া যায়নি।

 

৫. কোটিলা মুড়াঃ  

শালবন বিহার হতে ৫ কিলোমিটার উত্তরে ছোট পাহাড়ের শীর্ষদেশে আনুমানিক ৭ম শতাব্দীতে এটি নির্মিত হয়। এখানে গতানুগতিক ধারায় নির্মিত পাশাপাশি ৩টি স্তুপ আবিস্কৃত হয়েছে। এ স্তুপগুলো সম্ভবত বৌদ্ধ ত্রিরত্ন বা বুদ্ধ, ধর্ম ও সংঘের প্রতিকৃতি। এভাবে তিনটি স্তুপের পাশাপাশি সমাবেশ পাক-ভারত উপমহাদেশে বিরল। এগুলোর বেদী চার কোনা বিশিষ্ট। ভিত্তি বেদীর ওপর তৈরী হয়েছিল গোলকার ড্রাম এবং ড্রামের ওপর রয়েছে আধা গোলাকার গম্বুজ যার ওপর রয়েছে হামিকা ও চূড়া। এ স্তুপের মধ্যে রয়েছে ছোট একটি গোলাকার কামরা। এর চারিদিকে ইটের তৈরী বৃত্তকার দেয়াল রয়েছে। দেয়ালের বাইরে চারিদিকে আছে ৮টি ছোট ছোট কামরা। ধারনা করা হয় ১৩০০ শতাব্দী পর্যন্ত এখানে চন্দ্র বংশের সরব উপস্থিতি ছিল।

 

৬. চারপত্র মুড়াঃ

কোটিলা মুড়া হতে ১.৫ কিলোমিটার উত্তরে সেনানিবাস এলাকার গ্যারিসন  মসজিদ সংলগ্ন ৩৫ ফুট উচু পাহাড়ের শিরোদেশে এটি অবস্থিত। এই মন্দিরে চারটি আম্র শাসন প্রাপ্তির উপর ভিত্তি করে চারপত্র মুড়া নামকরণ করা হয়েছে। মন্দির লডহ চন্দ্র কর্তৃক আনুমানিক ১০০০-১০২০ খ্রী: নির্মিত। এটি লডহ মাধব (বিষ্ণু ) মন্দির নামে পরিচিত। এখানে পূর্ব-পশ্চিমে ১০৫ ফুট দীর্ঘ এবং উত্তর-দক্ষিণে ৫৫ ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট একটি বৌদ্ধ মন্দির আবিস্কৃত হয়।

 

 

৭. আনন্দ রাজার বাড়িঃ

আনন্দ রাজার বাড়ি নামে পরিচিত আনন্দ বিহার মহারাজা আনন্দদেব কর্তৃক নির্মিত হয়েছিল অষ্টম শতাব্দীতে মহারাজা ভবদেবের রাজত্বকালে । লালমাই ময়নামতি পাহাড়ের পূর্ব ভাগে অবস্থিত এই বিহার অপেক্ষাকৃত নিচু ও সমতল ভূমিতে প্রতিষ্ঠিত। বর্গাকারে নির্মিত বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই বৌদ্ধ বিহারটির লালমাই ময়নামতি অঞ্চলের সর্ববৃহৎ বৌদ্ধ বিহার। এর প্রত্যেক বাহুর দৈর্ঘ্য ৬২৪ ফুট। বিহার অভ্যন্তরে উত্তর বাহুর মধ্যস্থলে একটি উম্মুক্ত আঙ্গিনা ছিল এবং সেই আঙ্গিনাতেই ছিল একটি কেন্দ্রীয় মন্দির। পোড়ামাটির চিত্রফলক অলংকৃত ইটের অস্তিত্বের কারণে মন্দিরটি খুবই দৃষ্টি নন্দন। এখানে যে সকল মূল্যবান প্রত্নতত্ত্ব  আবিস্কৃত হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে নিউলিথিক যুগের অস্ত্রশস্ত্র, মূল্যবান পাথরের গুটিকা, মুদ্রা, তাম্রলিপি, ব্রঞ্জনির্মিত ডেটিক স্তুপ, পোড়ামাটির চিত্রফলক, অলংকৃত ইট, টেরাকোটা সিল, লোহার পেরেক, হাড়িপাতিল ইত্যাদি। আনন্দ রাজার দীঘি নামে পরিচিত একটি জলাশয় এর প্রায় ৯০ মিটার পূর্বে অবস্থিত। জলাশয়টি আনন্দ বিহারের জন্য খনন করা  হয়েছিল।

 

৮. কোট বাড়িঃ

কুমিল্লা বিএআরডি অফিসের প্রধান তোরন থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পশ্চিমে পাহাড়ের উপত্যকার প্রায় সমতল ভূমিতে এই বিহার অবস্থিত। কোট বাড়ি বিহার ছিল একটি বড় ধরণের বৌদ্ধ বিহার। এর প্রবেশ পথকে ঘিরে ছিল দুইটি ইমারত। এর বাইরের দেয়াল দ্বারা এক সময়ে পরিবেষ্টিত ছিল শাল বন বিহারের ভিক্ষুদের কক্ষসমূহ। বিহারের মধ্য স্থানে ছিল বিহারের কেন্দ্রিয় মন্দির। বর্তমানে সমগ্র বিহার এলাকা সমতল ভূমিতে রূপান্তরিত করে অসংখ্য চারাগাছ লাগানো হয়েছে।

 

৯. রাণী ময়নামতির প্রাসাদঃ

লালমাই ময়নামতি পাহাড় এলাকা বিভিন্ন প্রত্নকীর্তি আবিস্কার ও সেখানে প্রাথমিক উৎস খননের পর থেকে কীর্তিগুলি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হলেও ময়নামতি রানীর বাংলা পাহাড়ে যে কীর্তিটি আছে তাতে একটি ইহলৌকিক অর্থাৎ সিকিউলার অট্টলিকার ধ্বংসবশেষ লুকায়িত আছে। ১৯৯৬-৯৭ সালে এখানে যে উৎস খনন কার্য চালান হয়েছে তাতে স্থাপত্যক ধ্বংসাবশেষের সাথে বিচ্ছিন্ন অবস্থার কিছু পোড়ামটির ফলক ও অলংকৃত ইট পাওয়া গেছে। এ সকল পোড়ামাটির ফলক গুলিতে বেশ কিছু চিত্র বিধৃত ছিল, এদের মধ্যে কয়েকটি চিত্রে চারহাত বিশিষ্ট নরসিংহী, রাজহাঁস, ময়ূর, কিন্নরী, হাল কর্তনরত বৃক্ষকম মহিষের পিঠে নারী আরোহী অন্যতম, অলংকৃত ইটের মোটিফে রয়েছে পদ্ম পাপড়ি, ধাপময় পিরামিড ইত্যাদি। এতে প্রতিয়মান হয় রানী ময়নামতির প্রাসাদটি একটি সুশোবিত ধর্মীয় ইমারত ছিল।

 

১০. ২য় বিশ্বযুদ্ধে নিহত সৈনিকদের সমন্বিত স্থলঃ

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মিয়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চলে জাপানী বাহিনীর সঙ্গে কমনওয়েলথ যৌথ বাহিনীর লড়াইয়ে নিহত সৈনিকদের সমাধিস্থ এই ওয়ার সিমিট্রি, ২৪ জন জাপানী সৈন্যসহ বিভিন্ন দেশের ৭৩৭ জন সৈন্যকে এখানে সমাধিস্থ করা হয়। এর মধ্যে অবিভক্ত ভারতের ১৭৮ জন সৈন্যও রয়েছে। কমনওয়েলথ যুদ্ধ সমাধি কমিশন এ সমাধি ক্ষেত্রটির দেখাশোনা করছে।

 

 

খ. সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলকঃ

 

১. ময়নামতি যাদুঘরঃ

একতলা ও লম্বা আকৃতিক এই যাদুঘরটি দেখতে কিছুটা মহাস্থান যাদুঘরের মত। যাদুঘরে ঢুকতেই শলবন বিহারের একটি প্রতিকৃতি চোখে পড়বে। যাদুঘরটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫৫ সালে। যাদুঘরে চোখে পড়বে পোড়ামাটির ফলকে অংকিত যুগল অশ্ব, ঢাল ও তলোয়ার হাতে বুদ্ধমূর্তি, আহাররত রাজহংস, উড়ন্ত স্ত্রীমূর্তি, ব্রেঞ্জি, নির্মিত সবানী মূর্তি, যুগল মৎস্য, দীর্ঘ বিষ্ণু মূর্তি, ব্রোঞ্জের ঘন্টা, হরিণ, মানিষ সাপ ও বেজীর লড়াই, ফুলদানী, হস্তীকে অক্রমনোদ্যত আকৃতির থালা, চামচ, দা, ছুরি, পেরেক স্বর্ণমূদ্রা ও রৌপ্য মূদ্রা, বেলে পাথরের মূর্তি, ভোজ রাজার বাড়ী হতে প্রাপ্ত বিশাল বজ্রসত্ব মূর্তি। যাদুঘরে প্রাচীরের বাহিরে রয়েছে বিশাল শাল বাগান।

 

২. কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজঃ

কুমিল্লা শহরের প্রান কেন্দ্র কান্দিরপাড় এলাকায় ১৮৯৯ সালে রায় বাহাদুর শ্রী আনন্দ চন্দ্র ভিক্টোরিয়া কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬৮ সালে আয়ুব খান শাসনামলে এটা সরকারী করা হয়। এখানে অনার্সসহ মাস্টার্স এ লেখা পড়ার সুযোগ থাকায় এটাকে বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে। এর পূর্ব পাশে রানীর দিঘীর পশ্চিম পাড়ে রয়েছে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহনকারী ভিক্টোরিয়া কলেজের শহীদদের স্বরণে স্মৃতি স্তম্ভ। 

 

গ. প্রাকৃতি

 

১. ধর্মসাগর দিঘীঃ

কুমিল্লা শহরের প্রাণ কেন্দ্র কান্দির পাড় এলাকার উত্তরাংশে বিশাল আয়তন বিশিষ্ট ধর্মসাগর দীঘী খনন করছেন ত্রিপুরার মগারাজ ধর্ম মানিক্য (১৭১৪-১৭৩২), এর উত্তর পাড়ে রয়েছে রানীর কুটির, এবং পশ্চিমে পাড় বাধানো বিধায় প্রাতঃ ভ্রমণকারীদের জন্য আকর্ষনীয়।

২. রাজেশপুর ইকো পার্কঃ

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি রাজেশপুর ইকো পার্ক কুমিল্লা জেলা সদর থেকে ১৫ কিঃমিঃ দক্ষিণ - পূর্ব দিকে এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লালবাগের রাস্থার মাথা থেকে মাত্র ২.২ কিঃমিঃ দূরে অবস্থিত। ৫৮৭.৮৯ একর আয়তন বিশিষ্ট এই ইকো পার্কে রয়েছে বাঁশ বেত সহ শতাধিক প্রজাতির ঔষধী ও বনজ বৃক্ষ যা পর্যটকদের মোহিত করে। এই ইকো পার্কে ৮৪ প্রজাতির উদ্ভিদ এবং ১৩৫ প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। দর্শনার্থীদের সুবিধার জন্য এখানে রয়েছে বন বিশ্রামাগার, বসার ব্যবস্থা, গাইড ম্যাপ, পিকনিক সেড, গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা ও শিশু কর্ণারে রয়েছে বিভিন্ন খেলাধুলার উপকরণ। বনের মাঝে মাঝে নির্মাণ করা হয়েছে বিভিন্ন বিচিত্র প্রাণীর মডেল যা সহজেই ভ্রমন পিপাসুদের আকর্ষণ করে। রাজেশপুর ইকো পার্কের উত্তর ও পূর্ব পার্শে রয়েছে ভারতের সাথে আন্তর্জাতিক সীমানা যা দর্শনার্থীদের জন্য বাড়তি আকর্ষণ। 

লাকসাম

 

১. নবাব ফয়জুন্নেসার বাড়িঃ 

লাকসাম থানার তৎকালীন হোমনাবাদের খরস্রোতা ডাকাতিয়া নদীর তীরে উপমহাদেশের নারী জাগরনের অগ্রদূত, ভূমি অধিকারী লোক প্রশাসক, জন হিতৈষী নবাব ফয়জুন্নেসা প্রতিষ্ঠাকরেন পশ্চিমগাঁও নবাববাড়ি। অনেকটা ধ্বংসপ্রাপ্ত এবাড়িটি দ্বিতল এবং এর একটি কক্ষে রয়েছে পুরনো দিনের নবাব সাহেবার ব্যবহ্নত জিনিসপত্র। প্রতিটি ভবনের স্থাপত্যকলা দেখার মতো। মূল ভবনের পিছনে রয়েছে “রং মহল” যা সংস্কারের অভাবে ধ্বংসের মুখে। মূল ভবনের দেয়ালে, ঘরের দরজা-জানালার সামনে বা গায়ের নক্সাওয়ালা কাজগুলো অপূর্ব। ভবনের সামনে রয়েছে ১৯৯৮ সালে নবাবের উত্তরসূরি কর্তৃক স্থাপিত নবাব ফয়জুন্নেসার ম্মৃতি পাঠাগার ও গবেষনা কেন্দ্র, পাঠাগারে রয়েছে নবাবের লেখা কাব্যগ্রন্থ। রূপদালাল সহ মূল্যবান নানা বই আর সংরক্ষিত আছে মহারানী ভিক্টোরিয়া কর্তৃক ১৮৮৯ সালে প্রদত্ত ”নবাব” খেতাবের স্বীকৃতিস্বরূপ সুদৃশ্য তারকা খচিত অতি মূল্যবান হীরকের পাথর বসানো একটি মেডেল। বাড়ির সামনে ও পেছনে রয়েছে অনেকগুলো ঘাট বাধানো পুকুর, ১৮ গম্বুজ বিশিষ্ট অপরূপ কারুকার্য মন্ডিত মসজিদ, মসজিদের পাশেই নবাব ফয়জুন্নেসার সমাধি। আজকাল লাকসামের এই ঐতিহ্যবাহী জমিদার বাড়ি দর্শনে বহু দুর-দুরান্ত থেকে অনেক দর্শনার্থীর আগমন ঘটে।

 

২. জমিদার অতুলকৃঞ্চ রায় বাড়িঃ

প্রায় দুই’শ বছর আগে নির্মিত এই বাড়িটি লাকসামের জমিদার অতুলকৃঞ্চ রায় চৌধুরীর পোষ্যপুত্র অমূল্য কৃঞ্চ রায় চৌধুরীর জমিদারের শেষ স্মৃতি চিহ্ন। বাড়ির সামনের রয়েছে কাচারী আর পুজার ঘর। যুদ্ধকালীন সময়ে বাড়িটি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় বর্তমানে জমিদারের বংশধররা আধা-পাকা টিনের ঘর তুলে বসবাস করছেন। বাড়িটির নক্সা, কারুকার্য খচিত স্থাপত্য নির্মাণ শৈলী আর ইটের গাথুনীর সৌন্দর্য দেখার জন্য বিভিন্ন স্থান থেকে লোকদের আগমন ঘটে। অত্যন্ত মনোরম ও নিরিবিলি পরিবেশে স্থাপিত বাড়িটির সামনে রয়েছে একটি বিরাট মাঠ আর শান বাঁধানো পুকুর। অপরূপ স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত এই বাড়িটি লাকসামের অতীত ঐতিহ্যের এক নীরব স্বাক্ষী। এই স্থাপনাটি সংস্কার করলে প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন হিসেবে সংরক্ষিত হতে পারে। হতে পারে পর্যটন শিল্প স্থাপনা ও বিনোদনের জন্য পিকনিক স্পট।

 

৩. লাকসাম রেলওয়ে জংশনঃ 

দেশের বৃহত্তম রেলওয়ে জংশন লাকসাম এদেশের ইতিহাসে অনেক স্মৃতি আজও বহন করে আছে। এক সময় “কত লাকসাম কত রাত” নামে পরিচিত এই রেলওয়ে জংশন আর করলার ইঞ্জিন দেখতে রাতের আধারে গ্রামের নববধুরা ছুটে আসতেন। আধুনিকতার ছোয়ায় অনেক কিছুর পরিবর্তন হলেও আগতরা ইচ্ছা করলে দেখতে পাবেন পুরানো করলার ইঞ্জিন, পাম্পঘর আর সিগনাল ঘর।  

 

 খ. ধর্মীয়ঃ

১. সতের রত্ন মন্দিরঃ

জগন্নাথপুর গ্রামে গোমতী নদীর দক্ষিণ তীরে অবস্থিত সতের রত্ন মন্দিরটি বিভিন্ন আকারের ইট, চুন ও সুরকি দিয়ে নির্মিত। মন্দিরটি অন্তিম মোগল যুগীয় স্থাপত্য রীতি বৈশিষ্ট্যের ধারক। অষ্টকোনী এই মন্দিরটি নির্মিত হয়েছিল ত্রিপুরার রাজা দ্বিতীয় রত্নমানিক্য কর্তৃক। কিন্ত এর নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করেন ১৭৬১ সালে মহারাজ বৃঞ্জ কিশোর মানিক্য মন্দিরের অভ্যন্তরে বেশ কিছু রঙিন চিত্র অংকিত হয়েছে। এছাড়া এই মন্দিরে জগন্নাথদের, বলভদ্র ও সুভদ্রার প্রতিকৃতি রয়েছে। প্রতিবছর রথযাত্রা উপলক্ষ্যে অসংখ্য ভক্তের সমারোহে মন্দির চত্বর ও এর সংলগ্ন অঞ্চল মুখরত হয়ে উঠে। অত্যন্ত জরাজীর্ণ অবস্থার এই মন্দির ও এর প্রায় ৫০ ফুট উঁচু কেন্দ্রীয় রত্ন বা চূড়াটি আজও টিকে আছে।

 

২. জগন্নাথ মন্দিরঃ

জমিদার অতুলকৃঞ্চ রায় চৌধুরীর বংশধর ভক্ত কৃঞ্চ রায় চৌধুরীর স্ত্রী যশোদা চৌধুরী ১৩১১  বংঙ্গাব্দে ৭ই অগ্রহায়ন এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দুদের পূজা অর্চনার জন্য প্রতিষ্ঠা  করেন শ্রী শ্রী জগন্নাথ মন্দির। মন্দির প্রতিষ্ঠাকাল থেকে প্রতিবছর মন্দিরে মহোৎসব, পূজা অর্চনাসহ ছোট বড় সব মিলিয়ে ১৩টি অনুষ্ঠান পালন হয়ে আসছে। মন্দিরের পাশে অবস্থিত বিশাল দিঘিতে প্রতিবছর বড়শি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষনের অভাবে মন্দিরের সীমানা প্রাচীরসহ স্থাপনাগুলো ধসে পড়ার কারণে প্রকৌশলী মধুসুদন দের নকশার মন্দিরটি পুনঃসংস্কারের মাধ্যমে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। হরেক রকম টাইলস আর রঙিন ছোঁরার মন্দিরটি দর্শনীয় হয়ে উঠেছে।

 

৩. আলীশহর অথবা বরইগাঁও বৌদ্ধ মন্দিরঃ

এখানকার প্রধান আকর্ষন হচ্ছে দশম সংঘরাজ জ্যোতি পাল মহাথেরোচ অনাথ আশ্রাম, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বৌদ্ধ মন্দির। সম্প্রতি তৈরী হয়েছে অপরূপ নির্মাণ শৈলীতে তৈরী জ্যোতিপাল মহাথেরোর স্মৃতিসৌধ।


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon